সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৭ অপরাহ্ন
মোংলা প্রতিনিধি: মোংলার চৌরিডাঙ্গা আহমাদিয়া দাখলি মাদ্রাসার ২২ শিক্ষার্থীর দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। শিক্ষাথীদের পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রবেশ পত্র না দিয়ে মাদ্রাসা সুপার আত্মগোপন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় শনিবার দুপুরে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যলয়ের সামনে অবস্থান নেন ক্ষুব্ধ অভিভাবক সহ মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা বোর্ড হতে পরীক্ষার প্রবেশ পত্র সংগ্রহে মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতির অবহেলা ও খামখোয়ালীপনার অভিযোগ করেন তারা। আর এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে মাদ্রসা সুপার মাওলানা জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। একই মাদ্রাসার সহকারী সুপার আব্দুল হালিম লিখিত অভিযোগে জানান, চলতি মাসের ৩ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া ২০২০ সালের দাখিল পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রবেশ পত্র এক সপ্তাহ আগে দেয়ার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত তা দেয়া হয়নি। এতে পরীক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকরা হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপের মুখে আত্মগোপন করেছেন সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গির হাওলাদার ও মাদ্রসা সুপার মাওলানা জালাল উদ্দিন। এ মাদ্রাসা হতে চলতি বছর ২২ শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা। কিন্তু তাদের কেউ এখন পর্যন্ত প্রবেশ পত্র পাননি। আগামীকাল সোমবার এসএসসি / দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। আজ রোববারের মধ্যে ওই ২২ শিকার্থী প্রবেশ পত্র হাতে না পেলে অংশ গ্রহন করতে পারবেন না বলে জানান মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকরা। এ অবস্থায় দারুন হতাশার মধ্যে পড়েছে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
ওই মাদ্রাসার পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তারের পিতা শওকাত শেখ মেয়ের শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, দূনীর্তিবাজ মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতি কোমলমতি ছেলে মেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনী খেলছে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে সভাপতি কিন্ত তার কাছে গেলে তিনি কিছুই জানেননা বলে জানায়, আমার মেয়ে এ পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ দিকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান-পরীক্ষার্থীদের রেজিষ্টেশন থেকে শুরু করে ফর্মফিলাফ ও প্রবেশ পত্র সংগ্রহের নামে কয়েক দফায় হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেন মাদ্রাসা সুপার। এ ছাড়া ভীন্ন কৌশলে পরীক্ষাথী ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে। পরীক্ষার্থী মুজাহিদ হাওলাদার জানান-মাদ্রাসার সুপার ইচ্ছেকৃত ভাবে তার পিতার নাম রেজিষ্ট্রেশনে ভুল লিখে শিক্ষা বোর্ডে পাঠান। পরে ভুল লেখা নামের সংশোধন ও সঠিক করতে তার কাছ থেকে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা নেয়া হয়। একই ভাবে আয়শা আক্তার নামের অপর এক শিক্ষার্থীর কাছে থেকে ২ হাজার ৫শ’ টাকা আদায় করেন মাদ্রাসা সুপার মাওলানা জালাল উদ্দিন। এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা তবে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ইস্যুতে গত বুহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারী মাদ্রার ম্যানেজিং কমিটির জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সুপার মাওলানা জালাল উদ্দিন মাদ্রায় ও সভায় উপস্থিত হননি। উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতিতে সুপার আত্মগোপন করেছেন বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন-মাদ্রাসার জমি দখল,বিক্রি এবং অন্যত্র ইজারা প্রদান সহ নানা কৌশলে মাদ্রাসার লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে সুপার মাওলানা জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে। উত্থাপিত এ সকল অভিযোগের ভিত্তিতে ম্যানেজিং কমিটির সভায় আইনগত ব্যবস্থ গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বিষয় মাদ্রাসা সুপারের সঙ্গে দফায় দফায় মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাহাত মান্নান জানান, চৌরীডাঙ্গা মাদ্রসার দাখিল পরিক্ষার প্রবেশ পত্র না পাওয়ার বিষয় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং জেলা প্রশাসককেও অবহিত করা হয়েছে তিনি এব্যাপারে বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করছেন। তাছাড়া অভিযুদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থানেয়ারও আশ্বাস দেন নির্বাহী কর্মকর্তা।